নিজস্ব প্রতিবেদক–বরিশালের হিজলা উপজেলার খুন্না গোবিন্দপুরে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে হাতুড়ি পেটায় আবুল কাশেম হাওলাদার (৩২) নামের এক যুবক আহত হয়েছেন। আহত আবুল কাশেম বরিশালের হিজলা উপজেলার বড়জালিয়া ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের খুন্না গোবিন্দপুর গ্রামের ইউনুস হাওলাদারের ছেলে।গত ১৪-ই জুন শনিবার রাত আনুমানিক ১১ টার সময় একই উপজেলার হুমায়ুন কবিরের বাসায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।আহত আবুল কাশেম জানান, আমি হিজলা উপজেলার খুন্না বাজারে ব্যবসা করি আমার একটি কসমেটিক্সের দোকান আছে , গত শনিবার দোকান বন্ধ করে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দেই পথিমধ্যে আমার দূর সম্পর্কের মামা সত্তার গাজীর নেতৃত্বে রেজাউল গাজী, কবির গাজী, মমিন খান সহ অজ্ঞাত প্রায় ৩-৪ জন হঠাৎ করেই আমার গতিরোধ করে এবং আমার সঙ্গে কথা বলার এক পর্যায়ে পেছনদিক থেকে হাত , মুখ ও চোখ বেঁধে ফেলে, পরবর্তীতে তার মেয়ে রিপা যে বাসায় ভাড়া থাকে সে বাসায় নিয়ে আটকে রেখে তার মেয়ের সাথে আমার সম্পর্ক আছে এই মর্মে মিথ্যে অভিযোগ তুলে তাদের মুঠোফোনে স্বীকারোক্তি দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে ,এতে আমি অস্বীকৃতি জানালে তারা আমাকে হাতুড়ি , লাঠি ও রড দ্বারা এলোপাতাড়ি মারধর করে এবং বলে এই মুহূর্তে রিপাকে বিয়ে করতে হবে। কিন্তু আমি বিষয়টি অস্বীকৃতি জানিয়ে বলি রিপার তো স্বামী আছে ,আর তাছাড়া আপনারা জানেন আমি অল্প কিছুদিন হলো বিয়ে করেছি ,আমার পক্ষে তাকে বিয়ে করা সম্ভব নয়।আর এতেই ঘটে বিপত্তি তখন সত্তার গাজী ও তার মেয়ে রিপা সহ অন্যান্য লোকজন মিলে আমার উপরে অমানুষিক অত্যাচার চালায় এক পর্যায়ে আমার সাথে থাকা চল্লিশ হাজার টাকা ও হাতে পরিহিত একটি স্বর্ণের আংটি নিয়ে যায় শুধু তাই নয় জোরপূর্বক আমাকে দিয়ে চারটি সাদা ব্লাঙ্ক স্ট্যাম্পে সই সহ তাৎক্ষণিক ২- লক্ষ টাকা এনে দিতে বলে, আমি এত টাকা কোথা থেকে দেবো এই কথা বলায় তারা পুনরায় নির্যাতন শুরু করে তখন আমার আত্মচিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে।এ বিষয়ে নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক অনেকেই বলেন ঘটনাটি সত্যি।তারা বলেন সাত্তার গাজীর মেয়ে রিপার স্বামী সজল সৌদি প্রবাসী হওয়ায় তিনি হুমায়ুন কবিরের নিচতলার ফ্লাটে ভাড়া থাকেন , তার পিতা এবং সে অনেকটাই বেপরোয়া। তাদের ভয়ে আমরা কেউই মুখ খুলতে পারি না, রিপার এর আগেও একাধিক বিয়ে হয়েছে। রিপা বর্তমানে সৌদি প্রবাসী সজল দফাদারের তৃতীয় তম স্ত্রী। তার আগের ঘরে একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। তারা আরো বলেন ঘটনার দিন রাতে ঘরের মধ্যে ডাক চিৎকার দেয়ার শব্দ পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে ছুটে যাই এবং অবস্থা বেগুতি দেখে হিজলা থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে আবুল কাশেমকে উদ্ধার করে।অন্যদিকে ভুক্তভোগীর মা হাওয়ানূর বেগম বলেন সাত্তার গাজী আমার দূর সম্পর্কের ভাই তার ডিভোর্সই মেয়ে রিপাকে আমার ছেলের কাছে বিয়ে দিতে চেয়েছিল এতে আমি ও আমার পরিবারের কেউই রাজি না হয়ে আমার ছেলেকে কিছুদিন আগে অন্যত্র বিবাহ কড়াই। আর এজন্যই তারা ক্ষিপ্ত হয়ে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে । শুধু তাই নয় তাদের সাথে আমাদের জমি সংক্রান্ত বিষয় ও বিবাদ রয়েছে।তবে এ প্রসঙ্গে হিজলা থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি তদন্ত জাহিদুল আলম বলেন আমি খবর পেয়ে সাথে সাথেই ওখানে আমার থানার সাব- ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) মো: ইয়াদুল ইসলাম কে পাঠাই এবং তারা হুমায়ুন কবিরের বাসা থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় আবুল কাশেম নামের এক যুবককে উদ্ধার করে,স্থানীয়দের সহায়তায় হিজলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে, কিন্তু কর্তব্যরত ডাক্তার অবস্থা খারাপ দেখে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে প্রেরণ করেন।তিনি আরো বলেন ওখান থেকে অভিযোগের ভিত্তিতে সাত্তার গাজী ও রিপা নামের দুই জনকে আটক করা হয়েছে। পরবর্তীতে ভুক্তভোগীর মা হাওয়ানূর বেগম বাদী হয়ে হিজলা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। যার মামলা নং- ০৯ , জিআর নং -১৪৩/২০২৫